Law & Justice
  হেফাজত আর জামায়াত এক নয়
  08-12-2018

মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী

সকলের জেনে রাখা উচিত হেফাজত আর জামায়াত এক নয়। হেফাজতে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামকে গুলিয়ে এক করার চেষ্টা করছেন একটি গোষ্ঠী। জামায়াতে ইসলাম ও হেফাজতে ইসলাম দুইটি পৃথক-পৃথক সংগঠন। দু’টির আর্দশ ও উদ্দেশ্য ভিন্ন-ভিন্ন। জামায়াতে ইসলাম রাজনৈতিক সংগঠন অপর দিকে হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। তবে হেফাজত ইসলামের অনেক নেতা রাজনীতির সাথে জড়িত। তারা কিন্তু জামায়াতের রাজনীতি করে না। জামায়াত মওদুদী মতবাদে বিশ্বাসী। হেফাজত মওদুদী মতবাদের ঘোর বিরোধী। দু’টি দুই মেরুর সংগঠন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সমানে রেখে একটি à¦—োষ্ঠী হেফাজত ও জামায়তকে এক করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক দল বলে অপব্যাখ্যা দিচ্ছে। 

হেফাজত ও জামায়তকে নিয়ে অপব্যাখ্যাকারীদের জন্যই আমার এ লেখা। আমাদের মনে রাখতে হবে জামায়াত একটি রাজনৈতিক দল। একাত্তরে তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে দলগত অবস্থান নিয়েছে। দেশবিরোধী ও মানবতাবিরোধী সকল প্রকার অপকর্ম সংগঠিত করেছে। যোদ্ধাপরাধের অভিযোগ নির্বাচন কমিশন তাদের দলের নিবন্ধন ও মার্কা বাতিল করছে। জামায়াত একদিকে ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী সংগঠন। তারা জোটবদ্ধ হয়ে বিএনপির সাথে রাজনীতি করছে।

হেফাজতে ইসলাম হচ্ছে কওমী আলেমদের সমন্বয়ে গঠিত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এ সংগঠনের ইসলামের কেউ মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় স্বাধীনতাবিরোধী কিংবা মানবতাবিরোধী কোন অপকর্ম সংগঠিত করেনি।

ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন থাকার কারণে রাষ্ট্রের অনেক কিছুই তারা সহজে মেনে নিতে পারে না। তবে তারা সময়ের প্রয়োজনে অনেক কিছু উপলদ্ধি করতে পেরেছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করছে। স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে হেফাজতকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কোন সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।

ধর্মীয় শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে কওমী মাদরাসার ভূমিকা উল্লেখ যোগ্য। শুধু তা নয় বাংলাদেশের নাগরিকদের বিশাল অংশ কওমী মাদরাসার শিক্ষায় শিক্ষিত। অথচ তাদের শিক্ষা ব্যবস্থার কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছিলনা। হেফাজতে ইসলামের নেতারা দীর্ঘদিন কওমী মাদরাসার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য আন্দোলন করেছে। বিগত সরকারগুলো তাদের স্বীকৃতি না দিয়ে ভোটের রাজনীতিতে ব্যবহার করেছে।

বর্তমান সরকারের  à¦ªà§à¦°à¦§à¦¾à¦¨à¦®à¦¨à§à¦¤à§à¦°à§€  à¦¶à§‡à¦– হাসিনা অবহেলিত এই  à¦œà¦¨à¦—োষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করেছেন।আওয়ামী লীগ সরকারের এ স্বীকৃতির কৃতজ্ঞতা স্বরুপ শোকরানা মাহফিল করেছে হেফাজতে ইসলাম। এছাড়াও হেফাজতের ইসলামের সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোন রাজনৈতিক ও আদর্শিক সম্পর্ক নেই।

খালেদা জিয়া সরকার কওমী মাদরাসা শিক্ষার স্বীকৃতির প্রদান করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেল। পরিতাপের বিষয় হলো খালেদা সরকার তা করেনি। কওমী মাদরাসার আলেম-ওলামাদের সাথে তারা চরম প্রতারণা করেছে। কওমী শিক্ষা সনদের স্বীকৃতিকে কেন্দ্র করে একটি গোষ্ঠী  আওয়ামী লীগকে সাম্প্রদায়িক অপব্যাখ্যা দিচ্ছে।

তাদের এই ধরণের অপ-প্রচার, অপরাজনীতির অংশ। à¦‡à¦¸à¦²à¦¾à¦®à¦¬à¦¿à¦¦à§à¦§à§‡à¦·à§€ চক্রের এ সমস্ত অপব্যাখ্যায় সচেতন নাগরিক কখনো কান দিবে না। দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চা ও উন্নয়নের বড় ধরণের অন্তরায় হচ্ছে অতি-প্রগতিশীলদের বাড়াবাড়ি এবং ধর্মব্যবসায়ীদের ক্ষমতার মোহ। এরা উভয়ই দেশ, জাতি ও মানবতার শত্রু। সচেতন বিবেকবান মানুষ কখনো তাদের মিথ্যাচারকে বিশ্বাস করতে পারে না। সরকারের উন্নয়ন মূল্যায়ন করে  à¦¦à§‡à¦¶à§‡  à¦œà¦¨à¦—ণের স্বার্থে কওমী শিক্ষার্থীরা ভোটের মাধ্যমে অপশক্তিকে প্রতিহত করবে।

তাই আমার দৃঢ় বিশ্বাস ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে দেশের গণমানুষ নৌকা মার্কায় তাদের মূল্যবান ভোট দিবে। অপশক্তিকে বাংলাদেশের জমিন থেকে চিরতরের  à¦¬à¦¿à¦¦à¦¾à§Ÿ জানাবে। অবশেষে আরেক বার বলতে চাই হেফাজতে ইসলাম আর জামায়াতে ইলসলাম এক নয়। এক দৃষ্টিতে দেখাও  à¦¸à¦®à§€à¦šà§€à¦¨ হবে বলে মনে করি না।

 

লেখক: সদস্য, ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সভাপতি জয় বাংলা মঞ্চ।