Features
  ইতিকাফ ভেঙে গেলে করণীয়
  02-06-2019

মাহে রমজানে ইতিকাফ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। রমজানের ফজিলত, বরকত বিশেষত লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও বরকত পাওয়ার জন্য ইতিকাফের ভূমিকা অপরিসীম। হাদিসে এসেছে, ‘নবী কারীম (সাঃ) রমজানের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করতেন। কিন্তু এক বছর ইতিকাফ করতে পারেননি। পরবর্তী বছর বিশ রাত (দিন) ইতিকাফ করেছেন।’ (সুনানে আবু দাউদ ২৪৬৩)

ইতিকাফের প্রধান রুকন হলো ইতিকাফকারী সর্বদাই মসজিদের ভেতরে অবস্থান করবে। অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া মসজিদের বাইরে বের হবে না। যদি উপযুক্ত কারণ ছাড়া কিছু সময়ের জন্যও বাইরে বের হয় তবে ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। আয়েশা (রাঃ)বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে থাকাবস্থায় আমার দিকে মাথা বাড়িয়ে দিতেন আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি যখন ই‘তিকাফে থাকতেন তখন (প্রাকৃতিক) প্রয়োজন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না। (সহিহ বুখারী ২০২৯)

ইতিকাফ ভঙ্গের কারণসমূহ:

১. স্ত্রী সহবাস করা। ২. চুম্বন ও আলিঙ্গনের কারণে বীর্যপাত হওয়া। ৩. ইতিকাফের স্থান থেকে শরীয়ত সম্মত বা প্রাকৃতিক প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়া। ৪. ধর্মচ্যুত হওয়া।

৫.মাতাল হওয়া ৬. দীর্ঘ সময় অজ্ঞান ও উন্মাদ হয়ে থাকা।৭. ঋতুস্রাব ও প্রসূতি অবস্থা সৃষ্টি হওয়া।৮. সুন্নত এবং ওয়াজিব ইতিকাফের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছায় দিনের বেলা আহার করা।

ইতিকাফ ভেঙে গেলে কী করবেন?

উল্লেখিত যেকোনো কারণে সুন্নত ইতিকাফ ফাসেদ হলে যে দিনের ইতিকাফ ভেঙ্গে গেছে, শুধু ওই দিনের কাজা করতে হবে। পূর্ণ ১০ দিনের কাজা ওয়াজিব হবে না। ওই দিনের কাজা আদায়ের পদ্ধতি এই যে, যদি এই রমজান মাসে সময় থাকে, তাহলে যেকোনো দিন সূর্যাস্তের আগে ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে প্রবেশ করবেন এবং পরের দিন সূর্যাস্তের পর বের হবেন।

যদি এ রমজানে সময় না থাকে অথবা রমজানে কাজা করা সম্ভব না হয়, তাহলে যেকোনো একদিন রোজা রেখে ইতিকাফ কাজা করে নেবেন। পরের রমজানে কাজা করলেও পারবে। তবে যেহেতু জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই, তাই দ্রুতই আদায় করা উচিত।

সুন্নত ইতিকাফ ফাসেদ হওয়ার পর মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া জরুরি নয়; বরং বাকি দিনগুলো নফলের নিয়তে ইতিকাফ করতে হবে।

যদি অনিচ্ছাকৃত কোনো ভুলে সুন্নত ইতিকাফ ফাসেদ হয়, তাহলে বের না হওয়াই উচিত। কেননা অসম্ভব নয় যে, আল্লাহ তায়ালা খাস মেহেরবানিতে সুন্নত ইতিকাফের সওয়াবই দিয়ে দেবেন। তাই ইতিকাফ ফাসেদ হওয়ার পরও উত্তম হল শেষ দিন পর্যন্ত ইতিকাফ করে নেওয়া। যদি না করে তাহলেও জায়েজ আছে। আবার এটাও জায়েজ আছে, ইতিকাফ ফাসেদ হওয়ায় যদি বের হয়ে গিয়ে থাকে, তালে নফলের নিয়তে বাকি দিনগুলো ইতিকাফ করে নেবে।